খুলনায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামে চামড়া কিনছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে লোকসানে পড়বে ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। আশঙ্কা তৈরী হচ্ছে চামড়া পাচারের। আর চামড়ার আড়ৎ দ্বাররা বলছেন ট্যানারী মালিকদের কাছে পাওনা আদায় না হওয়াই দেউলিয়া হয়ে ব্যবসা বন্ধ করেছেন অনেকে। মাত্র তিন চার জন ব্যবসায়ী এবার খুলনায় চামড়া সংগ্রহ করছেন। আর সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে বেঁচেত পারবেন না দাবি তাদের।
চিরচেনা সেই ব্যস্ততা নেই খুলনার চামড়া পট্টিতে। মাত্র চার পাচ জন ব্যবসায়ী রাস্তায় টুল বসিয়ে কিনছেন চামড়া। নগরীর বাসা বাড়িথেকে চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রি করতে এসেছেন রহমত মিয়া। তিনি বলেন, এক লক্ষ টাকার গরুর চামড়া যা আগে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেন এখন তার মূল্য দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা দুইশ থেকে তিনশ টাকা। প্রতি বছর হাজার তিন এর টাকা লক্ষ করতে হচ্ছে তাদের মত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
আর একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন বলছেন, ছাগলের চামড়া যে দাম বলছে তাতে ফ্রি দিতে হবে অথবা ফেলে দিতে হবে।
এ বছর সরকার চামড়ার মূল্য গত বছরের থেকে কম নির্ধারন করেছে। ঢাকার বাইরে চামড়ার মূল্য কমেছে এবার ২০ শতাংশ। গত বছর যেখানে চমাড়ার মূল্য ছিল গরু প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা সেখানে এবার নির্ধারন করা হয়েছে ২৮ থেকে ৩২ টাকা। আর ছাগলের চামড়ার মূল্য কমেছে ২৭ শতাংশ কমিয়ে ১৮ থেকে ২০ টাকার স্থলে করা হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে তারা ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন না। তেমনি আবার করোনার কারনে চামড়া ঠিকভাবে বিক্রি করতে পারবে কিনা সেটা নিয়েও সংশয় আছে তাদের।
ব্যাবসায়ী আব্দুর রব জানান, চামড়া কেনার পর তার পিছনে খরচ আছে। সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে তারা বিক্রি করতে পারবেন না। আর একজন ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বাপি জানান, আমরা ফুট ধরে চামড়া কিনছি না। গড়ে চামড়া দেড়শত থেকে আড়াই শত টাকা দরে কিনছি।
ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া পাওনা না পাওয়াই দেউলিয়া হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। যেখানে ৪০ থেকে ৪৫ জন ব্যবসায়ী ছিল খুলনায়। সেখানে এখন মাত্র চার পাঁচজন ব্যাবসায়ী রয়েছে। তাও তারা প্রতিষ্ঠান নিয়ে গেছে খুলনা শহরের থেকে বাইরে মোহাম্মদ নগরে। নগরীর শেখপাড়া চামড়া পট্টির রাস্তায় টুল দিয়ে চামড়া কিনে নিয়ে যাওয়া হবে সেখানে। খুলনায় চামড়া ব্যবসা এখন নেই বলছেন খুলনা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আমান উল্লাহ আমান।
তিনি বলেন, প্রতি বছর চামড়া মূল্য কমছে। ফলে চামড়া ভারতে পাচার হচ্ছে। আর ট্যানারি মালিকরা বকেয়া না দেওয়াই দেউলিয়া হয়ে বাড়ি ঘর বিক্রি করে নিশ্ব হচ্ছেন তারা।
তবে করোনার কারনে এবার চামড়া পট্টিতে চামড়াও আসছে কম বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর বাজারে সামাজিক দূরত্ব তো মানাই হচ্ছে না ব্যবহার করছেন কেউই মাস্ক। যা সংক্রমন বাড়াতে পারে বলছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।