ইউনানী জগতের অতিপরিচিত একটি নাম হাকীম ফয়জুল ইসলাম নাবাতাতী। ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ জেলার কৃতি সন্তান প্রথিতযশা নাব্বায হাকীম শামছুল হক নাবাতাতী সাহেবের সুযোগ্য উত্তরসরী আলহাজ হাকীম ফয়জুল ইসলাম নাবাতাতী ১৯৪৯ সালের ১১ জুলাই এক মুসলিম সম্ভান্ত পরিবার শামছুল হক নাবাতাতী’র ঔরষে ও মালেকা খাতুনের গর্ভে জন্ম গ্রহন করেন। তার একক শ্রম ও সেবার বদৌলতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নাবাতী দাওয়াখানা যার বর্তমান নাম নাবাতী ফার্মাসিউটিকেলস। তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন স্বনামধন্য ইউনানী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মেমেনশাহী ইউনানী মেডিকেল কলেজ। যার অবস্থান দিঘারকান্দা বাইপাস। নিজস্ব জায়গার পরিমান এক একর। তিন তলা ভবন দাড়িয়ে আছে তার ইতিহাস স্বরুপ।
তিনি এই বিদ্যাপীঠের সম্পাদক ও প্রতিষ্টাতা প্রিন্সিপাল। ১৯৬৬ সালে ঢাকার হাবিবিয়া তিব্বিয়া কলেজ থেকে ইউনানী চিকিৎসা শাস্ত্রে প্রথম শ্রেনীতে “হাকীম হাজেক” সনদ লাভ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই পিতার প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসালয়ে সেবা দিতেন। এবং পিতা থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতেন। জ্ঞান অর্জনের জন্য ১৯৬৬ সালে পাকিস্থানের করাচি গমন করেন সেখানে তিনি প্যাথলজী, মাইনর সার্জারী, ফার্মাসিউটিকস সহ হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ ও হাকীম আজমল খান দাওয়াখানায় বিশেষ প্রশিক্ষন লাভ করেন। হামদর্দ পাকিস্থানের করাচির জাহাঙ্গীর রোড শাখায় চিকিৎসক হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭০ -১৯৭১ সালে করাচীর একাডেমি অফ ইস্টার্ন মেডিসিন (বর্তমান হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়) এর বার্ষিক কোয়ালিফায়িং পরীক্ষায় পাকিস্থান বোর্ডের ইনভিজিলেটর ও বহিরাগত পরীক্ষক ছিলেন।
১৯৭৭-১৯৭৮ সালে মোমেনশাহী ইউনানী মেডিকেল কলেজের গোড়া পত্তন করেন। ১৯৮২ সালে তিনি বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদিক এর সন্মানীত সদস্য হিসাবে দায়িক্ত পান। ১৯৯৯ সালে তিনি ইউনানী – আয়ুর্বেদিক বোর্ডের ঢাকা বিভাগীয় প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বোর্ডের পরীক্ষা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনানী স্নাতক বিভাগে পরীক্ষক হিসাবে ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দায়িক্ত পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ফেলোশিপ নিয়ে নেপাল, ভারত ও শ্রীলংকায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। আরো নানা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন।
ইউনানী চিকিৎসার প্রসারের এ অগ্রদূত গত রাতে মহান প্রভুর ডাকে সারা দেন।
আল্লাহ তায়ালা যেন উনাকে জান্নাতের মেহমান হিসাবে কবুল করেন। আমীন।।