শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো পৃথিবী জুড়ে চলছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক। প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। আক্রান্ত’র সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিদিন। আর এই আতঙ্কের মধ্যেও থেমে নেই বরিশাল শহরের আবাসিক হোটেল গুলোতে দেহ ব্যবসা ও মাদক বানিজ্য। সারা দেশে প্রশাসন ব্যাস্ত সময় পার করছে মহামারী করোনা ভাইরাস সতর্ক নিয়ে।
ঠিক সেই সুযোগে নিরবে চলে জমজমাট পতিতা ব্যাবসা। প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়েই প্রকাশেই অবৈধ এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। হোটেলে দেহ ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে দাবী কোতয়ালী পুলিশের। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখাগেছে, অন্যান্য দিনের মত করেই বরিশাল নগরের সদর রোড, চক বাজার ও গির্জা মহল্লা,পোর্ট রোড,বিউটি রোড এলাকার আবাসিক হোটেল গুলোতে রমরমা দেহ ব্যবসা চলছে। হোটেলের সামনে বসে থাকা দালাল বা হোটেল স্টাফরা দাড়িয়ে থেকে খদ্দের ডেকে ভেতরে নিয়ে যায়।
আবার ভ্রাম্যমান দালালরা খদ্দের ধরে সারাসরি হোটেল নিয়ে আসছে। আর হোটেল মালিক পক্ষ আশে পাশে থেকে পাহারা দিচ্ছে। তাদের কাছে বিশ্ব জুড়ে মহামারী এই করোনার কোন ভয় নেই মনে হয় । গত শুক্রবার এমনই একটি চিত্র ধরা পড়ে প্রতিবেদনের কাছে। নগরের আবাসিক এলাকা বান্দ রোর্ডের সাউথ কিং’র সামনে অবস্থিত হোটেল আজ রাস্তার পাশে^ দাড়ালেই চোখে পড়ে পতিতা বাবুর রমরমা দেহ ব্যবসার চিত্র।
হাঠৎ একটি যুবক আসে। প্রথমে পাশে দাড়ায়। তার মিনিট খানে পড়ে বলেন ভাই কাউকে খুজতে আসেন নাকি। তখন প্রতিবেদক বললেন হ্যা এখানে একটা হোটেল আছে না। যুবকটি বলেন হ্যা ভাই আছে। তবে আগের চেয়ে এখন উন্নত হয়েছে। এখন সব কচি মাল। রেট একটু বেশি করোনার কারনে। চেহারাও পরির মত। বিভিন্ন বয়সের আছে। আসেন ভাই ভিতরে ঢুকে দেখলেই প্রান জুড়ে যাবে আপনার। স্থানীয় সূত্রে হানা গেছে, নগরের লঞ্চঘাট, পোর্টরোড, বিউটি রোড সহ বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে অবাধে জমজমাট দেহব্যবসা।
এই সব দেহব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহ বধূরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বরিশাল নগরের ছোট বড় মিলে কয়েকটি আবাসিক হোটেলে এই ধরনের অনৈতিক কাজ চলছে। এসব আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন যৌন কর্মী সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত এবং রাতের বেলায় আবারও অন্য গ্রুপ এসে পরের দিন সকাল পর্যন্ত দেহব্যবসা করে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যায়। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবাসিক সকল হোটেলে অবৈধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করার ঘোষনা দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি এখনও। মেট্রোপলিটন পুলিশের নাকের ডগায় এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে গুটি কয়েকজন নামধারী পতিতা ব্যবসায়ী। সরেজমিনে দেখা যায়, আজিজ ওরফে পতিতা আজিজের রয়েছে ৫টি হোটেল,তার ভিতর মহসিন মার্কেটের ভিতরে হোটেল ঝিঁনুক,হোটেল ভোলা, পোর্টরোড সি-প্যালেজ , হোটেল স্বাগতম ও হোটেল বরগুনা। এই ৫টি হোটেলে আবাসিক সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে আজিজ ওরফে পতিতা আজিজ।
অপরদিকে পোর্টরোডে হোটেল চিল নিয়ন্ত্রণ করে আল আমীন। এদিকে বিউটি রোডে পতিতা ব্যবসায়ী মনিরের রয়েছে ৫টি হোটেল। প্রতিটি হোটেল মনির তার শ্যালক আল আমিনকে দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করায়। তার ভিতর বিউটি রোডের গলির ভিতর হোটেল পায়েল,হোটেল বন্ধুজন,হোটেল গালিব,হোটেল পাতাহাটসহ বেশ কিছু হোটেল রয়েছে পতিতা মনিরের। পোট রোড হোটেল চিল,পপুলালসহ নগরে একটি ফ্লাট বাসায় জমজমাট পতিতা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে নুরু ওরফে পতিতা নুরু। গতকাল লক্ষ করা গেছে, হোটেল পাতারহাটের সামনে দাড়িয়ে রয়েছে দুই জন খদ্দের ডেকে ডেকে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে এক দালাল। ওই স্থানের সামনে পৌছানো মাত্রই তাদের সাথেও কথা বলে হোটেলের দালালরা। নতুন জিনিস আছে ভাই। ভেতরে যাবেন কজন তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। কিন্তু মটরসাইকেলের সামনে প্রেস লেখা দেখে চেপে যান ওই দালাল। তাদের মধ্যে একজন কবির নামের ব্যক্তিকে ডাকার কথা বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় পতিতা দালাল।
কিছুক্ষন পরে বাইরে বেরিয়ে এসে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করেন এক নারী দালাল। জানা যায় ওই হোটেলের মালিক পতিতা মনির। তার নেতৃত্বে রয়েছে হোটেল গ্যালিপসহ কয়েকটি। এজন্য অবশ্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং কতিপয় হলুদ সাংবাদিকদের মাসহারা দিচ্ছে এই দেহ ব্যবসায়ী মনিরসহ অন্যনরা। পুলিশের রহস্যজনক নিরবতার কারনে তালিকাভুক্ত প্রায় প্রতিটি হোটেল নামক পতিতালয়ে দেহ ব্যবসা জমজমাট ভাবে চলছে। জানা গেছে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এসব হোটেল চলমান রেখেছে। তাছাড়া পতিতা আজিজ,পতিতা মনির, হোটেল চিলের ইয়াবা আল আমিনসহ একাধীক সহযোগী।
শুধু পতিতাসহ না তারা ইয়াবাসহ প্রশাসনের হাতে আটক হয়ে একাধিক বার কারাভোগ করেছে। একাধীক সূত্র জানায়, এসব আবাসিক হোটেলে অনেকেই আবার ভুয়া স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে পাঁচশ টাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে কয়েক ঘন্টা অবস্থান করে চলে যায়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ রয়েছে বিভিন্ন পেশার নারীরা । এসব হোটেলে শুধু মেয়ে না পাওয়া যাচ্ছে হাত বাড়ালেই মাদক । অনেক হোটেলের রুম মাদক সেবন ও জুয়ার জন্যও ভাড়া দেয়া হয়ে থাকে। হোটেলের লোকজন মাদকসেবীদের চাহিদা অনুসারে ফেনসিডিল, ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য এনে দেয়। প্রায়ই সময় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে এসব হোটেল থেকে পতিতা ও মাদকসহ ব্যাবসায়ীদের আটক করেন। তবে বর্তমানে কিছু দিন যাবৎ বড় ধরনের কোন অভিযান পরিচালনা করেননি পুলিশ। দেহব্যবসার সাথে জড়িত এক হোটেল মালিকের সঙ্গে আলাপ কালে তিনি জানান, পত্রিকায় নিউজ করলে আমাদের কিছুই হবে না।
তার কারণ স্থানীয় কিছু প্রসাশন ও পত্রিকার মালিকদের ম্যানেজ করেই সবকিছু চলে। এ বিষয় স্টাফ অফিসার সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল হালিম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা ভাইরাসের মধ্যেও দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে সকল কিছু খুলে দেয়া হয়েছে। তার মানে এই নয় যে হোটেলগুলো অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকবে। অবৈধ সব সময়ই অবৈধ, সেটা করোনা থাক