পরকীয়া প্রেমের জের থেকে সম্পর্কে জটিলতা, আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই খুন হতে হয়েছে ফেনীতে রাখাল ছেলে মোজাম্মেল হক সাগরকে।এই হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবকের প্রেমিকা, তার স্বামী ও ভাসুর।
রোববার সকালে ফেনী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী চাঞ্চল্যকর এ তথ্য প্রকাশ করেন। আসামিরা ফেনী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় খুনের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ৩০ মে সকালে ফেনী শহরের রামপুরের শাহনাজ ডেইরী ফার্মের রাখাল মোজাম্মেল হক সাগরকে (২৮) গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। প্রাথমিক অবস্থায় হত্যার ঘটনাটি ছিল ক্লু লেস। ডিবি পুলিশ তৎপরতা চালিয়ে হত্যার সাথে জড়িত পরকীয়া প্রেমিকা খালেদা আক্রার বৃষ্টি (২৬), তার স্বামী ফরিদগঞ্জ থানার অষ্টা গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে মোহন ওরফে নয়ন (৩০) ও নয়নের আপর বড় ভাই রাজনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে।
তিনি জানান, রাজনকে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার আষ্টা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ও নিহত সাগরের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়। সেই সূত্র ধরে শনিবার রাতে বৃষ্টি ও তার স্বামী নয়নকে ফেনীর শহরতলীর রানীর হাট এলাক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশকে দেওয়া আসামির জবানবন্দি উল্লেখ করে পুলিশ সুপার আরো জানান, আসামি বৃষ্টির সাথে নিহত সাগরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সাগরের মোবাইলে বৃষ্টি ও সাগরের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও ধারণ করা ছিল। কিন্তু খুনের কিছু দিন আগে তাদের পরকীয়া সম্পর্ক জানাজানি হয়ে গেলে সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়। বৃষ্টির স্বামী নয়ন সাগরের কাছ থেকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও উদ্ধার ও তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এতে যুক্ত করা হয় নয়নের ভাই রাজনকে। ৩০ মে ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে নয়ন ও ভাসুর রাজন বৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে সাগরের খামারে আসে। এ সময় সাগরের সাথে তাদের তর্ক বির্তকের এক পর্যায়ে সাগরকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা পালিয়ে যায়।
ফেনী ডিবির ওসি নুরুজ্জমান জানান, রোববার দুপুরে আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এএসএম এমরানের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।