তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অনেকে টিভিতে উঁকি দিয়ে সমালোচনা করে, ঘর থেকে বের হয়না। কোভিড -১৯ মোকাবেলায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে তাদের দেখা যায়না।
তিনি আজ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে দেশের অন্যতম শিল্প গ্রæপ এস আলম গ্রæপ কর্তৃক কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে একথা বলেন।
এ সময় এস আলম গ্রæপ এর অর্থায়নে কোভিড মোকাবেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে ১০০টি হাইফ্লো নজুল ক্যানুলা প্রদান, চট্টগ্রাম মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতালে ডেডিকেটেড ঘোষণা, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন উদ্বোধন এবং কক্সবাজার জেলাকে ২টি এ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়। তথ্যমন্ত্রী এসব কার্যক্রম উদ্বোধন ও এ্যাম্বুলেন্স দু’টি হস্তান্তর করেন। প্রদত্ত ১০০টি হাইফ্লো নজুল ক্যানুলার মধ্যে ঢাকায় ৫০টি এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালকে ৫০টি প্রদান করা হয়। খাদ্য সরবরাহ ফ্রিসহ ২৫০ শয্যার মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে কোরবানির ঈদের পরেই রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন এ ভাইরাস মোকাবেলায় সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও প্রথমে অজ্ঞাত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা স্বল্পতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। এখন আইসিইউ বেড ও হাসপাতালে জেনারেল বেড খালি থাকে। অক্সিজেনসহ অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জামের অপ্রতুলতা দুর হয়েছে। কোভিড চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। শহর অঞ্চলে তা আরো বেশি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ট নেতৃত্ব ও সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণের কারনে উন্নত দেশসমূহের তুলনায় আমাদের মৃত্যুহার অনেক কম। এমনকি এশিয়ার ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে আমাদের মৃত্যুহার কম।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জেকেজি ও রিজেন্ট গ্রæপের প্রতারণা সরকারই উদঘাটন করেছে। স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম দুর্নীতি রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল বলে তিনি এ সময় মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি অনেক ব্যক্তি ও শিল্প প্রতিষ্ঠান কোভিড চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছে। অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জাতি ধর্ম বর্ণ ভেদে মৃত ব্যক্তিদের সৎকার করছে। নিজ নির্বাচনি এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় এ ধরনের অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী এ সময় সেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, প্রচার বিমূখ এস আলম গ্রæপ সব সময় জনকল্যাণে এগিয়ে ছিল। কোভিড মোকাবেলায়ও তারা এগিয়ে এসেছে। তাদের এ কার্যক্রম দেখে অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎসাহী হবে এবং এগিয়ে আসবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অতীতে ভাইরাসের আক্রমণে প্রথিবীর পাঁচ ভাগের এক ভাগ মানুষ আক্রান্ত বা মৃত্যু বরণ করেছে। কোভিডেও এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আরো নানা ভাইরাস আসার আশংকা রয়েছে। কাজেই যারা স্বাস্থ্য ব্যয়ের তুলনায় সমর ব্যয় বেশি করে থাকে, তাদের এখন নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে। তাদেরকে মানবকল্যাণে ব্যয় আরো বৃদ্ধি করতে হবে।
বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদের সভাপতিত্বে এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র আজম নাছির উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, এস আলম গ্রæপের প্রতিনিধি আকিজ উদ্দিন বক্তৃতা করেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, বিএমএ নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে সার্কিট হাউজ প্রান্তরে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শিলালিপিতে মন্ত্রী এসব কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।