খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর-নরনিয়া রাস্তা নির্মাণে নিম্ন মানের ইট-বালু ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার এক জনপ্রতিনিধির ইটের ভাটা থেকে নিম্নমানের ইটের কোয়া ও রাস্তার পাশের নদী থেকে উত্তোলন করা বালু দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ডুমুরিয়ার চুকনগর থেকে নরনিয়া পর্যন্ত একটি কাঁচা মাটির রাস্তা নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তার ১৪১০ মিটার পিচ করার কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এ জন্য ১ কোটি ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯২৬ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের কাজ পেয়েছেন ঠিকাদার মিজানুর রহমানের এক ব্যক্তি। তবে তিনি নিজে না করে আরেক সহ-ঠিকাদার নাজমুলকে কাজটি দিয়েছেন।
এদিকে রাস্তায় নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগে করছে এলাকাবাসী। তারা এ অভিযোগে নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধদের নিকট দ্বারস্ত হয়ছেন। তারা ঠিকাদারের ব্যবহৃত নিম্নমানের ইটের কোয়া রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলতে বলছেন। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরকে বলছেন, ভালো মানের ইটের কোয়া ও বালু দিয়ে কাজ করতে। এলাকাবাসী বলেন, করোনায় কারনে প্রকৌশলীরা ঠিক মত এ কাজের তদারকি করতে আসছেন না। যে কারনে নিম্ন মানের উপকরণ দিয়ে এ রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, আমাদের নরনিয়া সড়ক নির্মাণে অত্যান্ত নিম্ন মানের ইট ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে এ কাজ করা হচ্ছে। এতে এলাকার মানুষেরা চরম ভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। আমরা এই নির্মাণ কাজের সঠিক তদারকি চায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এম এ সালাম বলেন, ‘আমাকে বেশ কয়েকজন রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে অভিযোগ করেছে। তারা বলছে নিম্ন মানের ইটের কোয়া ও পাশ্ববর্তী নদী থেকে উত্তোলন করা বালু ব্যবহার করা হচ্ছে এই সড়ক নির্মাণে। এলাকার মানুষ এতে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে।’
আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রতাপ কুমার রায় বলেন, ‘কাজটি যে কন্টাকটার পেয়েছে সে কাজ করছে না। আমাদের ডুমুরিয়ার এক জনপ্রতিনিধির অনুসারি সাব কন্টাকটার কাজটি করছে। তারা প্রভাব খাটিয়ে নিম্ন মানের ইটের কোয়া ও নিম্ন মানের বালু ব্যবহার করছে। এর গুনগত মান নিয়ে যতেষ্ঠ সমালোচনা হচ্ছে। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।’
তবে ঠিকাদার মিজানুর রহমান বলেন, ‘কাজটিতে স্থানীয় সেতু ব্রিকস থেকে ইট নেওয়া হচ্ছে। ওই ব্রিকসটি ডুমুরিয়ার সব থেকে উন্নতমানের ইট তৈরি করে। আর সাধারণ মানুষ ইটের মানের কি বুঝবে। তারা কি কোয়ালিটি সম্পর্কে জানে। আমি নিজে কাজটি করছি না। একজন সাব কন্টাকটারকে কাজটি দিয়েছি। তিনি গুনগত মান ঠিক রেখে কাজ করছেন।’
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদেকে কাজের গুনগত মান পরীক্ষা করতে বলেছি। এরপরও অভিযোগ আসলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
খুলনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম কবির বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। সড়ক নির্মাণে নিম্ন মানের ইট, বালু ব্যবহার করলে আমাদের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’