বিশ্বনাথ প্রতিনিধি
ফেইস বুকে ‘বর্ষা জাহান (ইড়ৎংযধ ঔধযধহ)’ নামের একটি আইডি থেকে ‘ত্রাণের চাল আতœসাৎ’ করার মিথ্যা অভিযোগ এনে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফজর আলীর বিরুদ্ধে করা হচ্ছে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৫ এপ্রিল বিকেল ৫টার দিকে ‘বর্ষা জাহান (ইড়ৎংযধ ঔধযধহ)’র নামীয় আইডিতে ফজর আলী মেম্বারের ছবিসহ পোস্ট করা হয় মিথ্যা অভিযোগটি। এনিয়ে শুরু তোলপাড়। আর বুঝে, না বুঝে মিথ্যা অপপ্রচারের পোস্টটি লাইক, কমেন্ট আর শেয়ারের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তি ছড়িয়ে দেন চারিদিকে। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে আইনের আশ্রয় নেন ফজর আলী মেম্বার।
এদিকে ফজর আলী মেম্বারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের ওই গুজব খবরটি ছড়ানোর সাথে জড়িত থাকায় ইসলাম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে থানা পুলিশ। সে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ইলামেরগাঁও গ্রামের মৃত মহর উল্লাহ’র পুত্র। রোববার বিকেল ইসলাম উদ্দিনকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ।
বর্ষা জাহান (ইড়ৎংযধ ঔধযধহ)-এর আইডি থেকে গুজবের পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চলমান করোনা সংকটে দুস্থদের দেয়া সরকারি চাল ফজর আলী মেম্বার আত্মসাৎ করেছেন। র্যা ব তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে ত্রাণের চাল।’ অথচ সরকারি বরাদ্ধের পাশাপাশি গত ৮ এপ্রিল ফজর আলী মেম্বার তার নিজ (২নং) ওয়ার্ডের ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে একান্তই ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাল বিতরণ করেছে।
ফজর আলী মেম্বারের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা অপপ্রচারের বিষয়টি নিয়ে রোববার বৈঠকে বসেন বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্য-সদস্যাগণ। বৈঠকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে গুজব প্রচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। অন্যথায় নিজেররা সরকারি ত্রাণ বিতরণে অংশ নেবেন না বলেও জানান তারা।
এব্যাপারে ফজর আলী মেম্বার বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রত্যেক বার সুষ্ঠ ভাবে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি গত ৮ এপ্রিল আমি আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওয়ার্ডের প্রায় ৪ শতাধিক কর্মহীন-অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের মাঝে চাল বিতরণ করেছি। তবুও আমার মান-সম্মান ক্ষুন্ন করে সমাজে হ্যায়-প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে একটি কুচক্রীমহল উদ্দেশ্যমূলক ভাবে মিথ্যা-বানোয়াট গুজব ছড়িয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক বলেন, ইউনিয়নের সর্বত্র সচ্চতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেগ অফিসারের (সরকারি কর্মকর্তা) উপস্থিতিতে ইউনিয়নে বরাদ্ধকৃত ত্রাণের শতভাগ চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তাই ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণের চাল আতœসাৎ করার কোন সুযোগ নেই। ফজর আলী মেম্বারকে সমাজে হ্যায় পতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আর যত দ্রুত সম্ভব ওই মিথ্যা অপপ্রচারের সাথে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, যে আইডি থেকে এরকম জঘন্য পোষ্ট করা হয়েছে, মনে হচ্ছে সেটি আইডি ভূঁয়া। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজন ইসলাম উদ্দিন নামের একজনকে আটক করেছি।
এব্যাপারে বিশ্বনাথের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, উপজেলার কোথাও চাল আতœসাৎ করার কোন অভিযোগ আমি এখনও (২৬ এপ্রিল) পাইনি। শতভাগ সচ্চতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হচ্ছে টেগ অফিসারের (সরকারি কর্মকর্তা) উপস্থিতিতে। এসব বিষয় নিয়ে কেউ মিথ্যা অপপ্রচার বা গুজব ছড়ালে সাথে সাথে থাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আবার ত্রাণ আতœসাৎ-এর সাথে কেউ জড়িয়ে পড়লে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।