ঢাকা প্রতিনিধিঃ ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর মহামারি প্রকোপের ক্ষেত্রে ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আংশিক গাফিলতি রয়েছে। তবে সংস্থা দুটিকে এককভাবে দায়ী করা যায় না। এ-সংক্রান্ত বিচারিক অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ঢাকা জেলা জজের নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনটি সোমবার (৯ মার্চ) অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে দাখিল করা হয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, হলফনামা আকারে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার (১০ মার্চ) প্রতিবেদনটি বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে। এতে ১০টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার কারণ খতিয়ে দেখতে বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ নভেম্বর ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল চৌধুরী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের কমিটিকে এ অনুসন্ধান চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ও সিডিসি’র তথ্যমতে, দেশে ডেঙ্গু জ্বরের অফিসিয়াল প্রাদুর্ভাব ছিল ২০০০ সালে। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। তবে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করে ২০১৯ সালে। সরকারি হিসাবে ওই বছর ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়।
প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং অনান্য প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, ২০১৯ সালে ডেঙ্গু মহামারি প্রকোপের ক্ষেত্রে ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আংশিক গাফিলতি থাকলেও এককভাবে সিটি করপোরেশন দুটিকে দায়ী করা যায় না। তাছাড়া কোনও ব্যক্তির একক গাফিলতিও অনুসন্ধান কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়নি।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের ১৪ জুলাই আদালত তার আদেশে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে নাগরিকদের ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া বন্ধ করতে এবং এডিস মশা নির্মূলে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।