মোঃ আব্দুল আলী দেওয়ান (আব্দুল্লাহ) চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ লাল সবুজের পতাকা নিয়ে গর্বিত আমরা আজ একটি স্বাধিন জাতি। সারা বিশ্বের মানচিত্রে একটি ছোট্ট সবুজ ও নিজস্ব সিমানা নিয়ে গড়ে উঠা একটি দেশ যার নাম স্বাধিন বাংলাদেশ। চির উন্নত শিরে ও বুক ফুলিয়ে আজ আমরা বিশ্বের দরবারে দাবি করতে পারি আমরা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছি আমাদের স্বাধিনতা। কোন হাতেম তায়ির দান, কোন দানশীল জাতির দেয়া উপহার, কোন জাতির দেয়া করুনা নয় আমাদের এই বাংলাদেশ।
আমরা আজ যে দেশকে নিয়ে এত গর্ব করি তা দির্ঘ সময় ও বছরের পর বছর অপেক্ষার পর (তেইশ বছর) ১৯৭১ সালের ৯ মাস ধরে যুদ্ধ করে এক সাগড় রক্তের বিনিময়ে অর্জন করি আমাদের স্বাধিনতা, সোনালি দিন ও একটি স্বাধিন দেশ যার নাম আজ সারা বিশ্বের বুকে মর্যাদা পূর্ন দেশ- বাংলাদেশ এবং আমাদের অহংকার ও সার্বভৌম ও স্বাধিন সোনার বাংলা। যা আজ আমাদেরকে সারা বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মানুষ কিংবা বাংঙ্গালী জাতি হিসেবে গৌরব দান করে মর্যাদার সাথে।
১৯৪৭ সালে ইংরেজদের কাছ থেকে প্রায় ২০০ বছর পর হিন্দু মুসলিম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি দেশ স্বাধিনতা লাভ করার পর আমরা পাকিস্তানের অংশে পরি। পাকিস্তান ছিল ২ ভাগে বিভক্ত (পূর্ব ও পশ্চিম আমরা ছিলাম পূর্ব পাকিস্তান) যা শাসন করতো পশ্চিম পাকিস্তান সরকার। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধিনতার নামে আমরা আরেকটি বেনিয়া, অত্যাচারি, জুলুমবাজ ও শোষক শ্রেনীর শাসনের কবলে পতিত হই। যা ফুটন্ত কড়াই থেকে বাঁচার জন্য পালাতে গিয়ে জ্বলন্ত কয়লায় পরার মতই নিদারুন অবস্থা।
আমরা দিনের পর দিন মাসের পর মাস বছরের পর বছর (দির্ঘ ২৩ বৎসর) অত্যাচার, শাসনের নামে শোষন, খুন, ঘুম এবং সর্বপ্রকার বৈশম্য আমাদের বাংঙ্গালী জীবনকে অতিস্ট করে তোলে। এরই মধ্যে নজিরবিহীন এক ঘটনা ঘটে ভাষা যুদ্ধ যা পৃথীবির কোন জাতি কিংবা দেশের মধ্যে হয়নি। তারা আমাদের মুখের ভাষার উপরেও হস্তক্ষেপ করার কঠোর ষড়যন্ত্র করে। এভাবে তাদের বিরুদ্ধে দিন দিন নানাহ আন্দোলন ও বিক্ষোভ সংগঠিত হতে থাকে সারা বাংলার জনতার মধ্যে। তাদের সকল নিপীড়নকে উপেক্ষা করে বাঙ্গালিরা হতে থাকে সংঘবদ্ধ কিভাবে তাদেরকে প্রতিহত করে এই দেশটাকে স্বাধিন করা যায়।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে সমগ্র বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন। কিন্তু পাকিস্তানি স্বৈরাচারী শাসকরা তা মানতে নারাজ। তারা ক্ষমতা নিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। যার ফলে দিনের পর দিন জমে থাকা ক্ষোভ ও নির্যাতনের কালো মেঘ সারা বাংলার সর্বস্থরের জনতাকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে, তারা স্বাধিনতার সূর্য্য ছিনিয়ে আনার স্বপ্ন দেখে প্রতিনিয়ত। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে জীবনের অন্তিম সময়ে পাওয়া বাংঙ্গালী ইতিহাসের সেরা নায়ক ও রাজনীতির কবি শেখ মুজিবুর রহমানের দিকে তাকিয়ে থাকেন কখন তিনি বলবেন স্বাধিনতার যুদ্ধে যাপিয়ে পরতে।
ঠিক আজকের এই দিনে ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ এই মহান নেতা তার সমস্ত আবেগ উজার করে বহু ঘটনার ও কাহিনির পরে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওর্দী উদ্যান) লাখো জনতার সম্মুখে, লাখো জীবন উৎস্বর্গ কারি মানুষের সামনে আবেগময় ও কান্না বিজরীত কন্ঠে স্বাধিনতার ডাক দেন। তিনি সেদিন সেই জনসভায় তার সমস্ত ভালবাসা ও আবেগকে উজার করে বেনিয়া শাসকদের প্রতিহত করতে বলেন, যার ফলে সেইদিন বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বপ্ন পূরনের জন্য পাগল হয়ে উঠেন কখন স্বাধিনতার সুধা পান করবেন! তাদের একটাই চাওয়া জীবন দিয়ে দেশটাকে স্বাধিন করা এবং অত্যারের দিনগুলো নিঃশেষ করে নিজ মাতৃভুমি কে শোষক মুক্ত করা!!
সেই দিনের ভাষনে আপামর জনতার প্রতি প্রিয় নেতা লক্ষ করে বলেন, ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর ওপর ঝাপিয়ে পর, সাতকোটি বাঙ্গালিকে তারা দাবিয়ে রাখতে পারবেনা, মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, তবুও এই দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।” সেই জ্বালাময়ী ভাষনের পর বাংলার মানুষ স্বাধিনতার প্রস্তুতি নিয়ে তাদের সকল অপশক্তিকে ন্যাশাৎ করে এবং ২৫ মার্চের গণহত্যা শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনি যার ফলে চুড়ান্ত যুদ্ধ বেঁধে যায় এবং দির্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, লাখো মানুষের ইজ্জত ও লাশের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি স্বাধিনতার লাল সবুজের পতাকা। আজ আমরা সারা বিশ্বের বুকে একটি স্বাধিন জাতি, স্বাধিনতার স্বাদ আমরা উপভোগ করি।