তাহিরপুর প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অতিদরিদ্র কর্মংসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্পের কাজে শ্রমিকের পরিবর্তে এস্কোভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ২৬ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মন্দিয়া গ্রামের মৃত কটু মিয়ার ছেলে মো. শাহ আলম। অপরদিকে এ প্রকল্পে নির্ধারিত শ্রমিকরা কাজ করতে না পেরে পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য ও প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সভাপতি মো. সাজিনুর মিয়াকে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর প্রকল্পে আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে চলতি অর্থ বছরে মোট ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্ধের প্রকল্পটি মন্দিয়াতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সন্নাসী আপর বাঁধ পর্যন্ত। প্রকল্প বাস্তাবায়ন কামিটির সভাপতি সাজিনুর মিয়া প্রকল্প নীতিমালা লঙ্গণ করে তড়িগড়ি করে অতি দরিদ্রের শ্রমিকদের মাধ্যমে কাজ না করে এস্কোভেটর যন্ত্র দিয়ে সড়ক ও আপর বাঁধের কাজ শেষ করেন। প্রকল্পের নীতিমালায় ৩শ মিটার দূর থেকে নির্দারিত শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার নির্দেশনা থাকলেও সরকারের নিয়মনীতি তোয়াক্ষা না করে ওয়ার্ড সদস্য সাজিনুর মিয়া এস্কোভেটর যন্ত্র দিয়ে মাত্র ১০ ফুট দূর থেকে নদীর পাড় কেটে বাঁধে মাটি দেন। ফলে পাহাড়ী ঢলে নদীর পাড় ভাঙ্গনের মুখে পড়বে। এমনকি সড়ক ও আপর বাঁধ ভেঙ্গে হাওর ডুবে কৃষকের ফসল পানিতে তলিয়ে যাবে। অপরদিকে মন্দিয়াতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থান থেকে মাটি কেটে বিশাল গর্ত সুষ্টি করায় পানিতে পরে শিক্ষার্থীদের প্রাণ নাসের হুমকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগকারী শাহ আলম বলেন, একই স্থানে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ৩ লাখ ৮০ হাজার, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ৮ মে.টন চাউল (কাবিকা) ব্যয় দেখিয়ে স্থানীয় শ্রমিকদের পরিবর্তে সাতক্ষীরা থেকে শ্রমিক এনে নাম মাত্র কাজ করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সভাপতি সাজিনুর মিয়া। স্থানীয় মন্দিয়া গ্রামের অতিদরিদ্র শ্রমিক মোর্শেদা বেগম ও মনু মিয়া ক্ষোভ নিয়ে বলেন, সরকার তাদের ৪০ দিনের কর্মসূচী দিয়েছেন তারা যেনো কাজ করে খেতে পারেন। তারা বলেন, প্রতিদিন এ প্রকল্পে ২শ টাকা রোজে এখানে ৪০জন মিলে মাটি কাটার নিয়ম থাকলেও ওয়ার্ড সদস্য সাজিনুর মিয়া এস্কোভেটর যন্ত্র দিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করেছেন।
স্থানীয় মন্দিয়াতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সানজু মিয়া বলেন, প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সভাপতি সাজিনুর মিয়া বিদ্যালয়ের জায়গার ভবনের কাছ থেকে বিশাল গর্ত করে এস্কোভেটর দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে বাঁধ দিয়েছেন। ফলে বিদ্যালয়ের ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা যে কোন সময়ে দূর্ঘটনার কবলে পড়ার আশংকা রয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি ওয়ার্ড সদস্য, প্রকল্প বাস্তাবায়ন কমিটির সভাপতি মো. সাজিনুর মিয়া বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার কাজ করেছেন এস্কোভেটর যন্ত্র দিয়ে কাজ করেননি।